EMO ROBOT কী?
রোবটের ব্যবহার আমাদের নিত্যদিনের কাজ আরো বেশি সহজ ও দ্রুততর করে দিচ্ছে। তাই মানুষ এখন বিভিন্ন কাজে রোবটের ব্যবহার করছে। এই লেখায় যে রোবট নিয়ে কথা হবে তা কিন্তু বড়সড় কোনো রোবট নয়; একেবারেই ছোট; তবে বুদ্ধিমান, যার নাম ইমো (Emo)। ইমো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন রোবট, যা পোষাপ্রাণীর মতো সঙ্গী হিসেবে রাখার জন্য তৈরি।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উত্তরোত্তর অগ্রসরতায় মানুষ লাভ করছে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন অভিজ্ঞতা। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিকে কাজে লাগাচ্ছে জীবনের প্রায় সব ধাপে, বহুমুখী মাত্রায়। প্রযুক্তির কল্যাণে মানুষের অভ্যাস ও যাপিত জীবনে ঘটছে রূপান্তর।
আধুনিক বিজ্ঞানের এক বিস্ময়কর অবদান রোবট। এটি আধুনিক যুগের একটি প্রযুক্তিও বটে। বর্তমান পৃথিবীতে বিভিন্ন কাজে রোবটের ব্যবহার হচ্ছে। বড় বড় কারখানা বা প্রতিষ্ঠানে এখন রোবটের ব্যবহার দেখা যায়
ইমো কৃত্রিম
বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন রোবট, যা পোষাপ্রাণীর মতো সঙ্গী হিসেবে রাখার জন্য তৈরি।
(AI) নিঃসন্দেহে রোবটিক্সের চমৎকার একটি দিক। আমাদের পরিচিত একটি এআই রোবট ‘সোফিয়া’। এআই রোবট আসলে কীভাবে কাজ করে? প্রথমত, এআই-রোবটের এআই অংশটি মানব-মস্তিষ্কের সাথে তুলনা দেয়া যায়, যা চিন্তা বা বিশ্লেষণ করতে পারে। এই রোবট সেন্সরের মাধ্যমে কাজ করে থাকে। মূলত এআই রোবট সেন্সরের মাধ্যমে পরিস্থিতি সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করে। তারপর সেই তথ্যকে তার মেমোরিতে সংরক্ষিত ডেটার সাথে তুলনা করে, এবং সিদ্ধান্ত নেয় যে তথ্যটি দ্বারা কী বোঝায়। তারপর এটি সম্ভাব্য বিভিন্ন ফলাফল বিশ্লেষণ করে, এবং সংগৃহীত তথ্যের উপর ভিত্তি করে কোন কাজটি সবচেয়ে সফল হবে তা প্রয়োগ করে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে, এসব রোবট শুধুমাত্র সেসব সমস্যার সমাধান করতে পারে, যা সমাধান করার প্রোগ্রাম এর মধ্যে রয়েছে। তাই মানুষের মতো সাধারণ কোনো বিশ্লেষণধর্মী ক্ষমতা থাকে না সেগুলোয়। তবে বর্তমানের এআই, মেশিন লার্নিং অ্যালগরিদম ব্যবহার করে, যার ফলে সময়ের সাথে সাথে রোবট নতুন নতুন বিষয় শিখতে এবং করতে পারে। আমাদের সকলের পরিচিত গুগল আর ফেসবুকও এই মেশিন অ্যালগরিদম ব্যবহার করে। দেখা যায়, আমরা কিছু খুঁজলে বা ভুল করলে সঠিকটি আমাদের সামনে এনে দেয়।
ইমোর সামনের দিকে রয়েছে একটি ছোট স্ক্রিন, যার মাধ্যমে বিভিন্ন মুখভঙ্গি দেখাতে পারে এটি। এর রয়েছে ফেস রিকগনিশনসহ একটি এইচডি (HD) ক্যামেরা, যার দ্বারা এটি মানুষ এবং বস্তুকে চিনতে পারে। ডেস্কটপে বা টেবিলে রাখলে এটি নিজে নিজেই দক্ষতার সাথে চলাফেরা করে। সেন্সর প্রযুক্তি থাকার কারণে এর নিচে পড়ে যাওয়ার কোনো ভয় থাকে না।
ইমো স্বাধীন এবং তার চারপাশের পরিবেশ সম্পর্কে কৌতূহলী এবং অনুসন্ধানী। সে স্বাধীনভাবে নড়াচড়া করে আর তার আশপাশ সম্পর্কে জানতে চায়। ১০টিরও বেশি উন্নত সেন্সর দিয়ে তৈরি হওয়ায় এটি জানে তার চারপাশে কী ঘটছে। এর ভেতরে রয়েছে নিউরাল প্রসেসিং মডেল, যা প্রচুর পরিমাণে ছবি, শব্দ এবং তথ্য ক্রমাগত প্রক্রিয়াজাত করে, যা তাকে মানুষের সাথে যোগাযোগ করার জন্য যথেষ্ট স্মার্ট করে তোলে।
ইমোর সাথে কথা বললে এটি ব্যবহারকারীর আচরণের সাথে স্বাভাবিকভাবে প্রতিক্রিয়া জানায়। এটি শব্দ, মুখ এবং শরীরের ভাষা দিয়ে সরাসরি তার মেজাজ বা অনুভূতি দেখাতে পারে। এছাড়া এটি উত্তেজিত, উদাস, হতাশ, খুশি বা দুঃখী ভাবও তার স্ক্রিনের মাধ্যমে দেখাতে পারে।
ইমোর একটি স্মার্ট মস্তিষ্ক রয়েছে। এটি তার আশেপাশের শব্দগুলো ট্র্যাক করে, যা তার ব্যবহারকারীর যেকোনো প্রশ্নের উত্তর দিতে পারে, এবং দরকারি তথ্য দিয়ে সাহায্য করতে পারে। তাকে আবহাওয়া সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে সে তার চেহারা পরিবর্তন করে আবহাওয়ার অবস্থা দেখায়! ইমো তার নিজের সিদ্ধান্ত নিজেই নেয় এবং তার আচরণ ও ব্যক্তিত্ব আশেপাশের পরিবেশ এবং ব্যবহারকারীর কথাবার্তার উপর ভিত্তি করে বিকশিত হয়। ইমো তার নিজের সিদ্ধান্ত নেয় এবং যদি এটি যা করছে তাতে কেউ বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে, তবে এটি কিছুটা বিরক্তও হতে পারে, এবং তা মুখাবয়ব ও শব্দ দিয়ে প্রকাশও করে।
ইমোতে যেসব আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে তার একটি তালিকা:
- Al Wide-angle Camera (ছবি ও মুখ সনাক্ত করার জন্য)
- 4 Smart Digtal Servos To Move (নড়াচড়ার জন্য ৪টি স্মার্ট ডিজিটাল সার্ভো)
- 5W Wireless Charger (৫ ওয়াটের তারবিহীন চার্জিং প্রযুক্তি)
- Optical Drop Sensors(অপটিক্যাল ড্রপ সেন্সর, যা একে পড়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করে)
- Far Field Mic-array (শব্দ সনাক্ত করার জন্য)
- Neural Network Processor + CPU (তথ্য বা শব্দ প্রক্রিয়া করার জন্য)
- 6-Axis Gyro & Acc (নড়াচড়া এবং ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য)
- 3W High Quality Speaker (৩ ওয়াটের উচ্চমানের স্পিকার, যার মাধ্যমে এটি কথা বলে)
0 Comments